সবেমাত্র শেষ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। উভয় পরীক্ষার জন্যই ছাত্র-ছাত্রীরা যথেষ্ট পরিমাণে আগ্রহী হয়ে থাকেন। এর মূল কারণ হলো জীবনের পথে এগিয়ে যাওয়ার পড়াশোনার দিক থেকে এই দুটি পরীক্ষা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুটি ধাপ।
যেখানে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার পর ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের পছন্দমত বিষয়ের উপর পড়াশোনা করতে পারেন, তেমনি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর ছাত্রছাত্রীরা এগিয়ে যান তাদের পেশাগত জীবনের দিকে। এই কারণে উভয় পরীক্ষার পরবর্তী সময়ে লেখাপড়ার খরচ বেশ কিছুটা বৃদ্ধি পায়। উচ্চশিক্ষার এই বিপুল পরিমাণে খরচ নির্বাহের ক্ষমতা থাকেনা বহু দরিদ্র পরিবারের।
তাহলে দরিদ্র পরিবারের মেধাবীর ছেলে মেয়েদের উচ্চশিক্ষার উপায় কী? বর্তমানে দরিদ্র পরিবারেও উচ্চ শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থা স্কলারশিপ বা মেধাবৃত্তি প্রকল্পের সূচনা করেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো সীতারাম জিন্দাল স্কলারশিপ। তাহলে আসুন, ২০২৫ সালের মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, গ্রাজুয়েশন এবং পোস্ট গ্রাজুয়েশনের ছাত্রছাত্রীদের জন্য এই স্কলারশিপ সম্পর্কিত তথ্য গুলি জেনে নেওয়া যাক।
স্কলারশিপের নাম– সীতারাম জিন্দাল স্কলারশিপ।
আবেদনের যোগ্যতা
১) দশম শ্রেণী এবং দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্ররা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য থেকে ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ এবং ছাত্রীরা ৭০ শতাংশ নম্বরের সাথে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকলে এই স্কলারশিপে আবেদন জানাতে পারবেন।
২) সরকারি ITI কোর্সে ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের শুধুমাত্র পাস নম্বর থাকলেই এবং বেসরকারি আইটিআই কোর্সে ভর্তি হওয়ার ছাত্রদের ৫৫% এবং ছাত্রীদের ৪৫% নম্বর থাকলে এই স্কলারশিপ এর জন্য আবেদন জানানো যাবে।
৩) B.A, B.Com, B.Sc -এর মতো সাধারণ স্নাতক ডিগ্রী কোর্সে যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা আবেদন জানাবেন, তাদেরকে পূর্ববর্তী অর্থাৎ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় আবশ্যিকভাবে ৬৫% থেকে ৬০ % -র মধ্যে নম্বর পেতে হবে।
৪) এক্ষেত্রে স্নাতক কোর্সে ভর্তি হয়েছেন এমন বিশেষভাবে শারীরিক সক্ষম ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে কোন রকম যোগ্যতা ছাড়াই এই স্কলারশিপ প্রকল্পে আবেদন জানানো যাবে।
৫) পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিগ্রিতে পড়াশোনা করছে না এমন ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৬০ শতাংশ থেকে ৬৫ শতাংশ নম্বর থাকলে এই প্রকল্পে আবেদন জানানো যাবে।
স্কলারশিপের পরিমাণ
সম্প্রতি সীতারাম জিন্দাল স্কলারশিপ প্রকল্পের আপডেটেড মূল্যায়ন অনুসারে উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতি মাসে ৫০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা, স্নাতক কোর্সের ছাত্রছাত্রীরা প্রতি মাসে ১১০০ টাকা থেকে ১৪০০ টাকা এবং স্নাতকোত্তর কোর্সের ছাত্রছাত্রীরা ১৫০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকার মধ্যে স্কলারশিপ পাবেন।
এছাড়াও যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের বিশেষভাবে প্রয়োজন থাকবে অথবা ইঞ্জিনিয়ারিং এর মত উচ্চ খরচ সম্পন্ন কোর্সে ভর্তি হবেন, তাদের ক্ষেত্রে ৩০০০ টাকা থেকে ৩২০০ টাকা পর্যন্ত প্রতি মাসে স্কলারশিপ পাওয়ার সুবিধা থাকবে।
প্রয়োজনীয় নথিপত্র
১) আবেদনকারীর পরিচয় পত্র হিসেবে আধার কার্ড অথবা ভোটার কার্ড।
২) সর্বোচ্চ তিন বছরের পুরনো বার্ষিক আয়ের প্রমাণপত্র অথবা BPL কার্ড।
৩) আবেদনকারীর সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার মার্কশিট এবং প্রমাণপত্র।
৪) নতুন কোর্সে ভর্তি হওয়ার রশিদ।
৫) আবেদনকারীর রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
৬) ব্যাংক একাউন্ট ডিটেলস।
৭) শারীরিক বিশেষ সক্ষমতার সার্টিফিকেট।
৮) কাস্ট সার্টিফিকেট ইত্যাদি।
আবেদন পদ্ধতি
প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীকে অফলাইন মাধ্যমে স্কলারশিপ প্রকল্পের আবেদন পত্রটি নিয়ে যথাযথ তথ্যের সঙ্গে পূরণ করতে হবে। এর জন্য প্রথমেই আবেদন পত্রটি A4 সাইজ পাতায় প্রিন্ট করিয়ে হাতে-কলমে সঠিক তথ্যের সাথে পূরণ করবেন। তারপর প্রয়োজনীয় সকল নথিপত্র গুলি আবেদনপত্রের সঙ্গে একত্রিত করে দেবেন।
আবেদন পত্রের সাথে সংযুক্ত সকল নথিপত্রে নিজের সই করবেন এবং প্রয়োজনীয় আবেদন পত্রটিতে বিদ্যালয়ে অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকার সই করাবেন। এরপর আবেদনকারীরা নির্দিষ্ট ঠিকানায় আবেদন পত্রটি একটি মুখবন্ধ কামে করে জমা করে দেবেন।
আবেদনের ঠিকানা– The Trustee, Sitaram Jindal Foundation, Jindal Nagar, Tumkur Road, Bengaluru 560073