মাধ্যমিক পাশে, সেরা ৫টি স্কলারশিপ! বার্ষিক ১৫ হাজার টাকা পাওয়া যাবে।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলির মধ্যে অন্যতম মাধ্যমিক পরীক্ষা। তবে ২০২৫ সালের এই পরীক্ষা ইতিমধ্যেই সমাপ্ত হয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা অপেক্ষা করছেন পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের জন্য। কিন্তু অনেক সময়ই মাধ্যমিক পরীক্ষার পর পরবর্তী উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রথম খরচের সম্মুখীন হতে হয় অভিভাবকদের। এই কারণে বহু দরিদ্র ঘরের ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
তবে বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার এমনকি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে এই সমস্ত মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের পরবর্তী লেখাপড়ার জন্য স্কলারশিপ বা মেধাবৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। আপনি যদি নিজের মেধাকে কাজে লাগিয়ে পরবর্তীকালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে স্কলারশিপ এর টাকায় নিজের লেখাপড়া এগিয়ে নিয়ে যাতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই আজকের প্রতিবেদন থেকে ভারতবর্ষের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি সরকারি এবং বেসরকারি স্কলারশিপ প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
১) স্বামী বিবেকানন্দ মেরিটকাম মিন্স স্কলারশিপ
মাধ্যমিক পরীক্ষায় ন্যূনতম ৬০% নম্বরের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছেন, এমন ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এই স্কলারশিপ প্রকল্পটি শুরু করেছে রাজ্য সরকার। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সকল দরিদ্র অথচ মেধাবী পড়ুয়াদের জন্য এই দুর্দান্ত স্কলারশিপটি চালু রয়েছে। যেখানে আবেদন করার পর প্রতিবছরে এককালীন ১২০০০ টাকা থেকে ৯৬ হাজার টাকার মধ্যে মেধা বৃত্তি প্রদান করা হয়। সাধারণত ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে অক্টোবর কিংবা নভেম্বর মাসে এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হয়।
Read More: পাঞ্জাব ব্যাঙ্কে ১২,৫৮০ শুন্যপদে নিয়োগ! মাধ্যমিক পাশে আবেদন।
২) নবান্ন স্কলারশিপ
পশ্চিমবঙ্গের আর্থিকভাবে অনগ্রসর মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এই দুর্দান্ত স্কলারশিপ প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের একমাত্র সেই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা এই আবেদন জানাতে পারবেন, যাদের মাধ্যমিক পরীক্ষায় নূন্যতম ৬০ শতাংশ নম্বর রয়েছে এবং যাদের পারিবারিক বার্ষিক আয় ৬০,০০০/- টাকার কম। ছাত্র ছাত্রীরা সাধারণত সারা বছর ধরেই এই স্কলারশিপ এর জন্য আবেদন জানাতে পারেন। এই মেধাবৃত্তির সাহায্যে ছাত্রছাত্রীরা বার্ষিক ১০,০০০/- টাকা স্কলারশিপ পেয়ে থাকেন।
৩) সীতারাম জিন্দাল স্কলারশিপ
ভারতবর্ষে চলা বিভিন্ন বেসরকারি স্কলারশিপ প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম হলো সীতারাম জিন্দাল স্কলারশিপ। এই প্রকল্পে মোট পাঁচটি বিভাগের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের মেধাবৃত্তি প্রদান করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে মাধ্যমিক থেকে শুরু করে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী পর্যন্ত বিভিন্ন যোগ্যতায় ছাত্রছাত্রীরা একাধিক আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকেন। ২.৫ লক্ষ টাকার কম বার্ষিক আয়োযুক্ত পরিবারের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এই স্কলারশিপটি রয়েছে। এখানে মাসিক ৫০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত বৃত্তি দেওয়া হয়ে থাকে।
৪) ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সংখ্যালঘু পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের জন্য এই দুর্দান্ত স্কলারশিপ প্রকল্পটি চালু করেছেন। সংখ্যালঘু পরিবারগুলির মধ্যে থেকেও প্রচুর পরিমাণে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে থাকে।
তারপর পরবর্তী সময়ে যাতে এই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষার পথে আর্থিক সমস্যা কোন রকম বাধার সৃষ্টি না করে, তার জন্যই এই দুর্দান্ত স্কলারশিপ এর মাধ্যমে ওই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ১০,২০০/- টাকা মেধাবৃত্তি প্রদান করা হয়। তবে এই স্কলারশিপ প্রকল্পে আবেদনের জন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পারিবারিক বার্ষিক আয় আবশ্যিকভাবে ২ লক্ষ টাকার কম হতে হবে।
৫) LIC গোল্ডেন জুবিলী স্কলারশিপ
কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ লাইফ ইন্সুরেন্স কর্পোরেশন লিমিটেডের পক্ষ থেকে দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য দুর্দান্ত এক স্কলারশিপ প্রকল্প শুরু করা হয়েছে। এই স্কলারশিপ এর মাধ্যমে মাধ্যমিকের পর উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে লেখাপড়ার জন্য আর্থিকভাবে অনগ্রসর পরিবারের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বছরে ১৫,০০০/- টাকার স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে।
এখানে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতকোত্তর স্তরে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীরা আবেদন জানাতে পারেন। তবে যে স্তরে ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়া করছেন, তার পূর্ববর্তী পরীক্ষায় অন্ততপক্ষে ৬০ শতাংশ নম্বরের সাথে পাস করলে তবেই এই স্কলারশিপে আবেদন জানানো যাবে। এর পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের পারিবারিক বার্ষিক আয় আবশ্যিকভাবেই ২ লক্ষ ৫০ হাজারের মধ্যে হতে হবে।