মাত্র ১৫ হাজার টাকা পুঁজিতে, এই ব্যবসাগুলি শুরু করুন! প্রতিমাসে লাখ টাকা আয় হবে।
চাকরি ক্ষেত্রে বর্তমানে অনেক সময়ই বিপুল সংখ্যক চাকরি প্রার্থীর প্রতিযোগিতায় পেরে ওঠে না অনেকেই। সেই কারণে প্রচুর মানুষ বর্তমানে চাকরির আশা ছেড়ে দিয়ে ব্যবসার ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করতে উদ্যোগী হয়ে উঠেছে। কিন্তু ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেক সময়ই ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যায়।
তবে আপনি যদি সঠিক পদ্ধতি বাছাই করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন তাহলে অবশ্যই লাভের মুখ দেখবেন। আজকে আমরা মাত্র ১৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে দুর্দান্ত কয়েকটি ব্যবসার উপায় আপনাদের জানাতে চলেছি। অবশ্যই এই বিষয়ে বিশদে জেনে নিয়ে আপনার নিজের স্বপ্নের ব্যবসাটি শুরু করে দিতে পারেন।
ব্যবসার মূলধন
যেকোনো ব্যবসার জন্য মূলধন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। চাকরির ক্ষেত্রে অবশ্যই এই মূলধনের দরকার হয় না তবে ব্যবসার ক্ষেত্রে নিজের পকেট থেকে টাকা দিয়ে একটি ব্যবসা শুরু করতে হয়। সেই কারণেই এই ব্যবসায় ক্ষতি হলে অনেকেই দিশা হারিয়ে ফেলেন।
Read More: মহিলাদের বিনামূল্যে সোলার স্টোভ দিচ্ছে মোদী! কিভাবে বুকিং করবেন জানুন।
তবে খুব বেশি টাকা বিনিয়োগ না করেও এমন ব্যবসা শুরু করা যায়, যেখানে ক্ষতির সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। তাই কম মূলধনে অর্থাৎ মাত্র ১৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এমন ব্যবসার সম্পূর্ণ তালিকায় এবং বিবরণ নিচে দেওয়া হল।
কম মূলধনের ব্যবসার প্রকারভেদ
পাপড় বা বড়ি বা আচার তৈরির ব্যবসা
বর্তমান সময়ে তৈরি করা বিভিন্ন খাবারের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আপনি যদি পাপড় বা বড়ি বা আচার তৈরির ব্যবসা শুরু করতে পারেন সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই লাভ হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর পরিমাণে রয়েছে।
এক্ষেত্রে আপনাকে এই ধরনের ব্যবসার শুরু করার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম গুলি প্রথমেই কিনে নিতে হবে এবং তারপরে বাজারে বা নিজের লোকালয়ে সেটি বিতরণ করার পদ্ধতিগুলো জেনে নিয়ে ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন।
Cloud Kitchen
এছাড়াও নিজের একটি ক্লাউড কিচেন তৈরি করে সুইগি বা জমাটোর মাধ্যমে খাবার ডেলিভারি করা যায়। এক্ষেত্রেও কম পরিমাণ মূলধনের অধিক লাভ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ব্যবসার শুরুর দিকে অবশ্যই ভালো ভালো অফার দিয়ে গ্রাহকদের আকর্ষিত করতে হবে।
Freelancing
বর্তমানের সবথেকে ট্রেন্ডিং রোজগারের উপায় হল Freelancing। ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনলাইনে ঘরে বসেই কনটেন্ট লিখে বা গ্রাফিক্স ডিজাইন করে বা নিজের দক্ষতা অনুযায়ী অন্যান্য পরিষেবা প্রদান করে লক্ষ লক্ষ টাকা রোজগার করা সম্ভব।
এক্ষেত্রে কোন ধরনের মূলধন বিনিয়োগ করার প্রয়োজন নেই। আপনার যদি কাজের বিষয়ে দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি সহজেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে টাকা রোজগার করতে পারবেন।
গাড়ি বা ঘর সাফাই পরিষেবা
অন্য মানুষের গাড়ি বা ঘর সাফাই এর পরিষেবা প্রদান করেও কোনরকম বিনিয়োগ ছাড়াই রোজগার করা সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে নিজস্ব এলাকার মধ্যে সঠিক পরিচিতি তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও প্রয়োজনে আপনি অন্য মানুষকে নিজের অধীনে রেখে এই কাজ করাতে পারেন।
Fashion Business
জামা কাপড় বা গয়নাগাটি এই সমস্ত জিনিসের চাহিদা কোনদিন শেষ হবেনা। তাই কম মূলধন বিনিয়োগ করে ফ্যাশন গার্মেন্টস বা ফ্যাশন এক্সেসরিজের ব্যবসা করা যেতে পারে।
মোবাইল সরানোর ব্যবসা
মোবাইলের চাহিদা বর্তমান সময়ে ব্যাপক পরিমাণে রয়েছে। প্রতিটি মানুষের হাতে হাতে যেমন মোবাইল রয়েছে, তেমনি সেই সমস্ত মোবাইল খারাপও হচ্ছে। এই খারাপ মোবাইল সারানোর ব্যবসা যদি শুরু করতে পারেন, তাহলে শুধুমাত্র ঘর ভাড়ার এবং মোবাইল সরানোর যন্ত্রপাতির জন্য মূলধন বিনিয়োগ করতে হবে। আর এক্ষেত্রে যদি আপনার নিজস্ব দোকানঘর থাকে তাহলে তো খুব সহজেই শুধুমাত্র যন্ত্রপাতিতে বিনিয়োগ করি এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
বাগান করার সামগ্রীর ব্যবসা
বাগানের বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রিও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক একটি ব্যবসার উপায়। প্রচুর মানুষ রয়েছেন যারা শখে ছাদের বাগান বা নিজেদের বারান্দায় বাগান তৈরি করে থাকেন। এই বাগান সাজানোর ফুলের চারা, বিভিন্ন গাছ, টব ইত্যাদি বিক্রি করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
CSC Center
বর্তমান সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা কমন সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে পাওয়া যেতে পারে। তাই এই বিষয়টিরও চাহিদা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাইবার ক্যাফে থেকে শুরু করে মানুষের রিচার্জ করে দেওয়া কিংবা জেরক্সের দোকান খোলা -এই সমস্ত ব্যবসার উপায় গুলি ন্যূনতম খরচে প্রচুর সংখ্যক লাভ দিতে পারে।
সিকিউরিটির ব্যবসা
ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে অন্যতম আরো একটি উপায় হল সিকিউরিটির ব্যবসা। বিভিন্ন বিদ্যালয়ে অফিসে কিংবা বাড়িতে প্রতিনিয়ত সিকিউরিটি প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই আপনি যদি বেশ কয়েকজন মানুষকে নিয়ে এই সিকিউরিটির ব্যবসা শুরু করতে পারেন তাহলে সেক্ষেত্রেও ক্ষতির নয় বরং প্রচুর পরিমাণে লাভের সম্ভাবনা রয়েছে।
ব্যবসা শুরু করার আগে কী কী জানতে হবে?
একটি ব্যবসা শুরু করার আগে সেই ব্যবসায় যাতে ক্ষতি না হয় সেই বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখা বাঞ্ছনীয়। সেই কারণেই ব্যবসায় নামার আগে বেশ কয়েকটি জিনিস আগে থেকে ধারণা করে নিতে হয়।
এর মধ্যে সব থেকে আগে যে জিনিসটা মাথায় রেখে তবে ব্যবসা শুরু করতে হবে তা হল বাজারের চাহিদা। এমন কিছু বিষয় নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে হবে যে বিষয়টির চাহিদা বর্তমানে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও যার চাহিদা ফুরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই নেই।
এর পাশাপাশি আপনি নিজে যে বিষয়ে দক্ষ সেই বিষয়ের ব্যবসা শুরু করা সব থেকে বেশি লাভজনক হতে পারে। এছাড়াও নিজের ব্যবসাকে বৃহত্তর গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন অনলাইন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম (Online E-commerce Platform) গুলির সহায়তা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।