Education Loan: পশ্চিমবঙ্গে এডুকেশন লোন কিভাবে পাবেন? ডকুমেন্ট কি লাগবে? সুদ কত?
Education Loan: দিনে দিনে যেভাবে মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে সেখানে লেখাপড়া শিখে উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে একটি ভালো জায়গায় পৌঁছানোর জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়ে থাকে। ছাত্র-ছাত্রীদের নিজের পছন্দমতো উচ্চশিক্ষায় ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে লক্ষ লক্ষ টাকা পর্যন্ত Admission Fees এবং সেমিস্টার খরচা পড়ে থাকে।
স্বাভাবিকভাবেই এরকম অবস্থায় দরিদ্র থেকে শুরু করে নিম্ন মধ্যবিত্ত এমনকি মধ্যবিত্ত পরিবারগুলি উচ্চশিক্ষার এত খরচ বহন করতে পারেন না। তাহলে কি এই সমস্ত পরিবার থেকে উঠে আসা মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষার অধিকার নেই? তারা কি প্রচুর পড়াশোনা করে নিজের পছন্দমত ফিল্ডে নিজেদেরকে ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে কোনদিনই পারবেন?
বর্তমান যুগে এই প্রশ্নগুলো একেবারেই অনর্থক। তার কারণ বর্তমানে উচ্চশিক্ষা এবং শিক্ষা লাভের জন্য সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের পাশাপাশি ব্যাংকের পক্ষ থেকে লোন প্রদান করা হয়ে থাকে। এই সমস্ত আর্থিক রিংগুলি সাধারণত ছাত্র-ছাত্রীরা গ্রহণ করতে পারে এবং তারা পরবর্তী সময়ে চাকরি পেলে এই ঋণ গুলি পরিশোধ করে নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন।
এছাড়াও বর্তমান সময়ে বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাংকের পক্ষ থেকে ছাত্রছাত্রীদের ক্রেডিট কার্ড প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে এই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের লোনের সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষই খুব বেশি খোঁজখবর নেন না যার কারণে বিভিন্ন লোনের পার্থক্য এবং ছাত্র জীবনে এই লোনগুলিতে কিভাবে আবেদন করবেন সেই বিষয়গুলি অজানাই থেকে যায়।
তাই বর্তমান যুগে উচ্চ শিক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে না নিয়ে নিজেদের ইচ্ছে থাকলে অবশ্যই ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের নামে ব্যাংকের ঋণ গ্রহণ করতে পারেন। এই বিষয়ে কোন কোন জিনিস মাথায় রাখতে হবে এবং কীভাবে এই লোনগুলিতে আবেদন করবেন? কোন লোনটি আপনার জন্য সুবিধা দায়ক হবে? স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড ভালো নাকি ব্যাংকের স্টুডেন্ট লোন?
সেই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে আজকের প্রতিবেদনটিতে আলোচনা করা হলো। তাই অবশ্যই এই পেজের সাথে যুক্ত থাকা ছাত্র ছাত্রীরা আজকের প্রতিবেদনটি মনোযোগ সহকারে পড়ে জেনে নিন আপনার উচ্চশিক্ষায় সহায়ককারি আর্থিক ঋণের খুঁটিনাটি।
Education Loan কী?
আমাদের ভারতবর্ষে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রয়োজন হয় প্রচুর অর্থের। শুধুমাত্র যে কলেজ বা ইনস্টিটিউটে ভর্তি হওয়ার জন্যই টাকার প্রয়োজন হয় তা কিন্তু নয়। কলেজে ভর্তি হওয়ার উচ্চ খরচের পাশাপাশি সেই কোর্সের বই খাতা কেনা, টিউশন এর খরচ এবং যদি কেউ হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করেন তাহলে সেই হোস্টেলের খরচ ইত্যাদি মিলিয়ে কয়েক হাজার টাকার প্রয়োজন হয় প্রত্যেক মাসেই। তাই শুধুমাত্র ছাত্র-ছাত্রীদের লেখা পড়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক বা সরকারের পক্ষ থেকে যে ঋণ প্রদান করা হয় তাকেই এডুকেশন লোন বলা হয়।
Education Loan কেন প্রয়োজন?
ছাত্র ছাত্রদের উচ্চ শিক্ষার জন্য অবশ্যই সরকারের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিভিন্ন মেধাবৃত্তি বা স্কলারশিপ (Scholarship) দেওয়ার প্রচলন রয়েছে। বিভিন্ন রাজ্য সরকার বিভিন্ন সময়ে ছাত্রছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে। কিন্তু অনেক সময়ই সেই অর্থ উচ্চ শিক্ষার জন্য পর্যাপ্ত হয় না এবং নিজেদের কাছেও অনেক সময় এত বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্ছিত থাকে না।
সেই সময়ে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার থেকে পিছিয়ে যেতে যাতে না হয় তার জন্যই এডুকেশন লোন এর ব্যবস্থা করা হয়েছে ব্যাংক বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। তাই আপনার যদি নিজের লেখাপড়া বা নিজের ছেলে মেয়ের উচ্চশিক্ষার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে অর্থ না থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই এডুকেশন লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
Education Loan এবং Personal Loan এর মধ্যে পার্থক্য কী?
অনেকে এরকম রয়েছেন যারা এডুকেশন লোন এবং পার্সোনাল লোন এর ক্ষেত্রে পার্থক্যটা বুঝতে পারেন না। তবে আজকের পর থেকে আপনাকে আর এই প্রশ্নটি দ্বিতীয়বার কাউকে করতে হবে না। আসলে এডুকেশন লোনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫০,০০০/- টাকা থেকে কয়েক কোটি টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া যায়। কিন্তু একজন মধ্যবিত্ত ব্যক্তি সর্বত্র ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্তই পার্সোনাল লোনের আবেদন করতে পারেন।
এছাড়াও Education Loan ক্ষেত্রে ব্যাংক বা ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অত্যন্ত কম সুদের শতকরা রাখা হয়। কিন্তু পার্সোনাল লোন এর ক্ষেত্রে এমন কোন ছাড় পাওয়া যায় না। এছাড়াও যে ব্যক্তি শিক্ষার জন্য লোন নিয়ে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে করের ছাড় প্রদান করা হয়। তাই বুঝতেই পারছেন পার্সোনাল লোনের থেকে শিক্ষার জন্য এডুকেশন লোন নেওয়া সব থেকে বেশি লাভদায়ক।
How to Apply for Education Loan?
বিভিন্ন ব্যাংক বা ঋণদায়ক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ছাত্রছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষার জন্য Education Loan প্রদান করা হয়ে থাকে। এখানে ছাত্র-ছাত্রী কিংবা তাদের অভিভাবকরা সরাসরি আর্থিক ঋণের জন্য আবেদন করতে পারেন। সাধারণত দু’রকম ভাবে এডুকেশন লোন নেওয়া যেতে পারে : ১) ব্যাংকের চিরাচরিত লোন প্রক্রিয়া ও ২) স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড।
Student Credit Card কী?
সাধারণ ক্রেডিট কার্ডের মতোই স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডও বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এই ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের উচ্চ শিক্ষার বিভিন্ন খরচ বহন করতে সক্ষম হবেন। এর পাশাপাশি স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে উচ্চশিক্ষার ভর্তির খরচ এর পাশাপাশি টিউশন ফি, প্রয়োজনীয় ল্যাপটপের খরচ ইত্যাদিও পেমেন্ট করা যাবে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীদের এই ধরনের ক্রেডিট কার্ড প্রদান করা হয়ে থাকে। এখানে এক একজন ছাত্র-ছাত্রী সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্রেডিট লিমিট ব্যবহার করতে পারবেন এবং সেই ক্রেডিট লিমিট এর ওপর সর্বোচ্চ চার শতাংশ সুদ নেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে।
Student Credit Card-এর নিয়ম কী কী?
১) স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ বহন করতে পারবে।
২) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে আবেদন করার জন্য নূন্যতম ১০ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
৩) পড়াশোনা চলাকালীন ছাত্রছাত্রীরা যদি ক্রেডিট কার্ডের লোন পরিশোধ করেন তাহলে সুদের ক্ষেত্রে ছাড় পাওয়া যাবে।
৪) তবে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে যে লোন করা হয়ে থাকে সেই লোনটি সর্বোচ্চ একটি সময়সীমার মধ্যেই পরিশোধ করা বাঞ্ছনীয়।
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এডুকেশন লোন নেওয়ার জন্য কোন কোন বিষয়গুলি বিবেচনা করতে হবে?
১) বিভিন্ন ব্যাংকের পক্ষ থেকে Education Loan এর জন্য বিভিন্ন ধরনের অফার প্রদান করা হয়ে থাকে। তাই উচ্চশিক্ষার জন্য Education Loan নেওয়ার পূর্বে অবশ্যই ভালোভাবে আলাদা আলাদা ব্যাংকের অফারগুলি সম্পর্কে জেনে নিতে হবে এবং তারপরে নিজের পছন্দমত অফারটি বেছে নিয়ে আবেদন করতে পারবেন।
২) ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে জামানত শেষ হবে কিছু রাখতে হবে কিনা সেই বিষয়েও ভালোভাবে জেনে নিয়ে তবেই আবেদন করা উচিত।
৩) আপনার নিজের প্যান কার্ডের আন্ডারে যদি ভালো ক্রেডিটস করে থাকে তাহলে Education Loan-এর ক্ষেত্রে কোন রকম সমস্যার মুখে পড়তে হয় না। তাই একটি ভালো ক্রেডিট স্কোর বরাবরের জন্য মেনটেন করা অবশ্যই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
৪) এডুকেশন লোন নেওয়ার পাশাপাশি সেই লোনের ঋণ পরিশোধ করার একটি পরিকল্পনা আগে থেকে করে রাখা অবশ্যই উচিত। তাই লোন পরিশোধের পরিকল্পনা ছাড়া লোনের জন্য আবেদন করবেন না।
কোন কোন নথিপত্রের প্রয়োজন হয়?
Education Loan কিংবা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড যে কোন ক্ষেত্রেই আবেদনের জন্য অবশ্যই ছাত্রছাত্রীদের বেশ কিছু নথিপত্র জমা করতে হয়। এই নথি পত্র গুলির মধ্যে রয়েছে-
১) ছাত্র ছাত্রীর পরীক্ষার মার্কশিট
২) নতুন কোর্সে ভর্তির প্রমাণপত্র
৩) ছাত্র ছাত্রীর আধার কার্ড
৪) ছাত্র ছাত্রীর বা অভিভাবকের প্যান কার্ড
৫) আবেদনকারীর পারিবারিক বার্ষিক আয়ের প্রমাণপত্র
৬) আবেদনকারীর ঠিকানার প্রমাণপত্র
৭) নিজের রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি
৮) আবেদনকারী এবং অভিভাবকের ব্যাংকের পাস বই ইত্যাদি।
Student Credit Card Website | Apply Link |
FAQ for Education Loan
চাকরি না পেয়েও কি স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করা যায়?
একজন স্টুডেন্ট চাকরি না করলে তবেই স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড এর জন্য আবেদন করতে পারেন। তাই চাকরি না পাওয়া অবস্থায় স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে আবেদন করার জন্য কোনরকম সমস্যা হবে না।
একজন ছাত্র কি একাধিক স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড রাখতে পারে?
না, একজন ছাত্রের একাধিক স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড ধারণ করা সম্ভব নয়। ব্যাংক বা ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে একাধিক স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের আবেদন সাধারণভাবে মঞ্জুর করা হয় না।
স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার জন্য কত টাকা আবেদন মূল্য দিতে হবে?
স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে আবেদন করার জন্য ভারতবর্ষের কোনরকম চার্জ নেওয়া হয় না। ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন।